উখিয়া-টেকনাফ সড়কে অবৈধ যানবাহন, বাড়ছে দূর্ঘটনা

শফিক আজাদ, উখিয়া :

উখিয়া-টেকনাফসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে বাণিজ্যিক ভাবে চলাচল করছে প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক অবৈধ যানবাহন। সড়ক পথে দায়িত্বশীল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকতা, হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক সার্জেন্টকে ম্যানেজের মাধ্যমে রোড পার্মিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স বিহীন এসব যানবাহন বেপরোয়া ভাবে চলাচল করলেও মাশোহারা পাওয়ার কারনে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভুমিকা রহস্যজনক।

এতে করে একদিকে যেমন সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে, তেমনি সরকার বঞ্চিত হচ্চে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে। সরকারের কৈরী করা যানবাহন আইনে নীতিমালা অনুযায়ী ড্রাইভিং লাইসেন্স, রোড় পার্মিড সম্বলিত যাত্রী পরিবণের জন্য নির্ধারিত যানবাহন ব্যতিত অন্যান্য যানবাহনে যাত্রী পরিবহন সম্পুর্ণ নিষেধাজ্ঞা কাগজে কলমে বিদ্যমান থাকলেও প্রয়োগ নেই। ফলে কক্সবাজার-টেকনাফ ৭৯ কিলোমিটার সড়ক পথে দায়িত্বশীল ৎআইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজনকে টোকেনমানি পরিশোধ করে যাত্রী পরিবহনের পারমিট নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৭সালের আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের মানবিক সেবার নামে কর্মরত এনজিও সংস্থার কর্মী ও মালামাল পরিবহনের কক্সবাজার-উখিয়া-টেকনাফ সড়কে চলাচল করছে প্রায় ৫ সহ¯্রাধিক যানবাহন । দুরপাল্লার বিলাশ বহুল যানবাহন ছাড়াও যাত্রী পরিবহণে অন্য যে সব যানবাহণ নিয়োজিত রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, মাইক্রো, জীপ (চাঁন্দের গাড়ী), সিএনজি, বেবী টেক্সী, ভটভটি,অটো রিক্সা ইত্যাদি। নিয়মনীতি উপক্ষ্ োকরে এসব যানবাহন সড়কগুলোতে চলাচল করছে শুধুমাত্র আইনশৃংখলা রক্ষা কারী বাহিনীর মাসিক টোকেনের অনুবলে। বাস মালিক সমিতি নেতৃবৃন্দের অভিযোগ ওয়ান ওয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বিরামহীন ভাবে গাড়ী চলাচল করছে। এমতাবস্থায় দুরপাল্লার যাত্রীবাহী গাড়ী গুলো নির্ধারিত সময়ে, গন্তব্য স্থলে পৌছে দেয়ার জন্য সতর্কতা অবলম্বন করার পরেও অবৈধ ভাবে চালিত নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ী চলাচল করার কারণে তাদেরকে দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। এভাবে কারণে অকারণে এ সড়কে মাত্রাতিরক্ত সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। জানা যায়, বর্তমানে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে সরকার কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। যে কারণে অশিক্ষিত,অযোগ্য,অদক্ষ চালকেরা সহজে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছে না। শুধু মাত্র ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার আবেদন করেই শত শত চালক সড়কে যানবাহন চলাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

উখিয়ার প্রবীন চালক আব্দুল করিম (৪৫) বলেন, তার একটি লাইসেন্স নবায়ন করতে দিয়েছে প্রায় ১ বছর অতিক্রম হওয়ার পরেও সে লাইসেন্স পায়নি। যার কারণে তাকে বেকার দিন যাপন করতে হচ্ছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে সহজশর্তে লাইসেন্স প্রদানের নিয়ম ছিল। বর্তমানে সরকার কঠোরতা অবলম্বন করায় সহজেই লাইসেন্স পাওযা যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় শত শত দক্ষ চালককে বেকার দিন যাপন করতে হচ্ছে।

সে আরো বলেন, ক্ষেত্র বিশেষে অদক্ষ চালকেরাও যানবাহন চালানোর ফলে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনা বড়ছে। প্রশাসন ও আইনী জটিলতার কারণে বর্তমানে ৭৫ শতাংশ দক্ষ চালক ডাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছে না। ৫০ শতাংশ অদক্ষ আনাড়ি চালক বিভিন্ন উপায়ে সড়কে যানবাহন চালিয়ে টুপাইস ইনকাম করছে। যে কারণে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়ে অসংখ্য যাত্রী সাধারণ হয়রানির শিকার হচ্ছে। এছাড়াও গত ২বছরে অর্ধশতাধিক লোকজন নিহতের পাশাপাশি সহ¯্রাধিক আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকে পঙ্গুত্ব অবস্থায় দিন যাপন করছে।

এ ব্যাপারে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল মনসুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা প্রতিনিয়ন অবৈধ যানবাহনগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। অবৈধ যানবাহন নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত গঠন করে সড়কে অবৈধ ভাবে চলাচল করার দায়ে যানবাহন আটক করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। তবে পুলিশ সড়কে অবস্থান করার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পর অবৈধ যানবাহন গুলো নিরাপদ স্থানে সরে পড়ার কারণে অধিকাংশ অবৈধ যানবাহণ ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।